সাতক্ষীরাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রতিক সময়গুলোতে উদ্বেগজনকভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতিকে নির্ধিদায় বিপজ্জনক বলে মনে করা যায়।
প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সড়কে প্রাণ ঝরছে, মৃত্যুর লাইনটা দীর্ঘ হতে দীর্ঘতর হচ্ছে। কখনো কখনো এই দুর্ঘটনার চিত্র ভয়াবহ এবং বিভৎস হয়ে মানবতাকে কাঁদিয়ে একটি পরিবারকে তছনছ করে চলেছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শিকার, নিহত, আহতদেরম বেশির ভাগ কিশোর ও তরুণরা।
আগামী দিনের বাংলাদেশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নির্মমভাবে মৃত্যুবরণ করছে আর তাই আমাদের পিতামাতাসহ অভিভাবকদের অবশ্যই কোনো অবস্থাতেই তাদের কিশোর সন্তানের হাতে মোটরসাইকেল তুলে না দেয়ার জন্য অনুরোধ সাধারণ মানুষের। একটি ১৪-১৫ বছরের কিশোর মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে কতটুকু দক্ষ ও সতর্ক এবং দায়িত্বশীল হতে পারে সে বিষয়টি অবশ্যই দায়িত্বশীল অভিভাবকদের ভাবনার বিষয়।
আবেগ আর বীরত্ব দেখানোর ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল দ্রুতগতিতে চালানোর যে প্রবণতা, তার থেকে তাদের সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা থাকতে হবে পরিবারের পক্ষ থেকে এমটি মনে করেন সচেতন অভিজ্ঞ মহল। অভিজ্ঞ মহল মনে করেন আমাদের অভিভাবকদের শপথ নেয়া উচিত হবে।
আমার সন্তানকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে কোনোভাবেই তার হাতে মোটরসাইকেল তুলে দেয়া হতে বিরত থাকতে হবে এমটি ভাবনা সচেতন মহলের। সন্তান অবশ্যই পিতা মাতর কাছে মহব্বতের, আদরের এবং পরম মমতার তাই বলে মোটরসাইকেল দিয়ে সেই মমতার শেষ পরিণতি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা কাম্য নয়।
কিশোর-তরুণরা কেবল পরিবারের নয় তারা দেশের সম্পদ, এই তরুণরা বয়স, পরিপার্শ্বিকতা সর্বোপরি সঙ্গত কারণে আবেগ প্রবণ, কৌতূহলী এবং নিজেকে জাহির করাসহ শ্রেষ্ঠত্ব আর বীরত্ব দেখাতে অভ্যস্থ আর সড়কে বীরত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং হচ্ছে যে বাবা-মায়ের সন্তান অকালে মৃত্যুবরণ করে।
বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় হারিয়ে যায় সেই মা-বাবা এবং পরিবার আজীবনই কেঁদে ফিরে, পৃথিবীতে সন্তানের ওপর আর কে? তাই সন্তান সুরক্ষা দিতেই মোরটসাইকেল না এবং না বলতে হবে। কিশোর, তরুণ ছেলেটি সড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে সে কেবল নিজেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে তা নয় পথচারী বা বিপরীতমুখীর কোনো যানবাহন কেউ দুর্ঘটনায় সঙ্গী করছে।
সাতক্ষীরার বাস্তবতায় সড়কগুলোতে তরুণ, কিশোররা মোটরসাইকেল দাপিয়ে চলেছে এবং দুর্ঘটনার ও শিকার হচ্ছে। অতি সম্প্রতি দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীর করুন মৃত্যু জেলাবাসীকে কাঁদিয়েছে সেই সাথে উদ্বিগ্ন করেছে। কিশোর তরুণদের হাতে মোটরসাইকেল বিরোধ অভিযান ব্যাপকভাবে কার্যকর করার সময় এসেছে।
তরুণরা যেসব কারণে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম মোটরসাইকেল চালানোর অনভিজ্ঞতা অর্থাৎ সনদবিহীন, বেপরোয়া গতিতে বাইক চালানো, তিনজনে চড়া, হেলেদুলে চালানো, হাত ছেড়ে দিয়ে চালিয়ে বীরত্ব প্রদর্শনের অপচেষ্টা করা, ট্রাফিক আইন না মানা, একে অপরের ওভারটেক করা, বারবার লেন পরিবর্তন করা, গাড়ি চালানোর সময় মুঠোফোনে কথা বলা, একাধিক মোটরসাইকেল সড়কজুড়ে চলা, হেলমেট ব্যবহার না করা।
সর্বোপরি জীবন সম্পর্কে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন ধারণা না থাকা, পিতামাতা এবং অভিভাবকদের দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সনদবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সবার আগে জীবন, সবার অপেক্ষা বড় আমাদের সন্তান এটাই শেষ কথা, আর সিদ্ধান্ত এই অবস্থান থেকেই আসতে হবে সচেতন অভিভাবকদের পক্ষ থেকে।
টিএইচ